নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবহন শ্রমিক এবং বাসমালিকদের দ্বন্দ্বের জেরে কুষ্টিয়ার সঙ্গে খুলনা ও ফরিদপুর রুটে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে শিকার হচ্ছেন।আজ শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধের কারণে অনেকেই বাস কাউন্টারে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। সকালে শহরের মজমপুর বাস ডিপো ও শহরতলীর চৌড়হাঁস এলাকার বাস টার্মিনালে এই দুই রটে যাওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীকে। জেলা বাসমালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েকদিন ধরেই ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে ফরিদপুরের ট্রিপ নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এর জেরে ৫ এপ্রিল মধ্যরাতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকায় কুষ্টিয়ার গড়াই পরিবহনের স্টাফদের মারধর করেন ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এর প্রতিবাদে শুক্রবার ভোর থেকে কুষ্টিয়া-খুলনাগামী গড়াই-রূপসা পরিবহন এবং কুষ্টিয়া থেকে ফরিদপুরগামী সব যাত্রীবাহী বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যশোরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফরহাদ পারভেজ বলেন, পরিবার নিয়ে যশোর যাওয়ার জন্য টিকিট কাউন্টারে এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন কীভাবে খুলনায় যাবো দুশ্চিন্তায় পড়েছি। আমার মতো অনেক যাত্রীকেই ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে দুই সন্তান ও ছোট ভাইকে নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে খুলনায় যাওয়ার জন্য মজমপুর গেটে আসেন নাহিদ নামে এক পরিবার। এসে জানতে পারেন বাস চলছে না। দুই সন্তান ও ছোট ভাইকে নিয়ে কীভাবে গন্তব্যস্থল যাবেন এ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে তারা। একই সময় কথা হয় দুই বছরের শিশু সন্তান নাফিসা ও ৪ বছরের শিশু তালহার মা লিয়া বেগমের সাথে। তিনি তার দুই সন্তানকে নিয়ে খুলনায় যাবেন। দুইজন সন্তানকে নিয়ে কীভাবে গন্তব্যস্থল যাবেন এ নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি। জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলু বলেন, ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়ন বেশি ট্রিপের অন্যায্য দাবিতে আমাদের শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে, বাস ভাঙচুর করেছে। এর প্রতিবাদে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আক্তার হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ মোটরশ্রমিক নেতারা বাসের নতুন ট্রিপ দাবি করছেন। তাদের এ অন্যায্য দাবির কারণেই মূলত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমরা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বসি। এ সময় ঝিনাইদহ জেলার শ্রমিকরা কুষ্টিয়ার পরিবহন স্টাফদের মারধর করে এবং বাস ভাঙচুর করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বাস শ্রমিক-মালিক গ্রুপ উভয় মিলে দুই রুটে বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।