1. nannunews7@gmail.com : admin :
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৫ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ার ৩ দিনের লালন স্মরণোৎসব উদ্বোধন

  • প্রকাশের সময়ঃ- রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৪৫ পড়া হয়েছে
বঙ্গবন্ধু ও লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদের দর্শন এক ও অভিন্ন --- মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি
বঙ্গবন্ধু ও লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদের দর্শন এক ও অভিন্ন --- মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-

বঙ্গবন্ধু ও লালন সাঁইয়ের মানবতার দর্শন, মানুষের প্রতি ভালবাসা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এক ও অভিন্ন। গতকাল কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াতে বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের স্মরণোৎসবের উদ্বোধন ও প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। তিনি বলেন, লালন সাঁইজি তার বাণীতে বলেছেন, ‘মানুষ ভজলে সোনার হবি’ অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই’। দু’জনেই সোনার মানুষের সন্ধান করেছেন, প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। হানিফ আরও বলেন, লালন সাঁই মানবতার বাণী গানের মাধ্যমে ছড়িয়েছেন বাংলার পথে প্রান্তরে। আর বঙ্গবন্ধু মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রেখা বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। লালন জাত পাতের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন আর বঙ্গবন্ধু সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলনীতি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও লালনের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাণী সমাজের সবখানে ছড়িয়ে দিতে হবে তবেই আজকের এই আলোচনা সফল ও সার্থক হবে।

এতে সভাপতিত্ব করবেন লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ১ আসনের সংসদ সদস্য আঃকাঃমঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ, কুষ্টিয়া-৪ কুমারখালী-খোকসা আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন খান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, বিজ্ঞ পিপি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী, কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সভাপতি ডাঃ এস এম মুস্তানজিদ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব (কেপিসি)’র সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব। প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহীনুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মর্কর্তা বিতান কুমার মন্ডল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পিপি ও লালন একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য এ্যাড. শহিদুল ইসলাম। আধ্যাত্মিক গান, বাউল মেলা ও সাধুসংঘের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার কুষ্টিয়া কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় শুরু হয়েছে তিনদিনের লালন স্মরণোৎসব। আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধনী ও আলোচনা সভা শুরু হবে হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা থেকে। দেশ বিদেশ থেকে ভক্ত অনুসারীরা আগে থেকেই লালন আখড়ায় জায়গা করে নিয়েছেন। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আখড়াবাড়ির প্রাঙ্গনে বর্ণিল পরিবেশের সৃষ্টি করেছে লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষ। মরমী এ সঙ্গীত সাধকের স্মরণোৎসব উপলক্ষে তাঁর সাধন-ভজনের তীর্থ স্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গন পরিণত হয়েছে এখন উৎসবের পল্লীতে। দেশ-বিদেশ থেকে এখানে আগমন ঘটেছে লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজন’সহ অসংখ্য মানুষের। উৎসব শুরু হয়েছে গতকাল ৪ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬:৩০ টা থেকে স্মরণোৎসবে থাকছে লালনের স্মৃতিচারণ করে আলোচনা সভা , লালন সঙ্গীতানুষ্ঠান ও লালন গ্রামীণ মেলা। কুষ্টিয়া শহরের কোল ঘেঁষে কুমারখালী উপজেলার কালীগঙ্গা নদী। এ নদীর তীরেই ছেঁউড়িয়ার লালন সমাধি। বাংলা ১২৯৭’র পহেলা কার্তিক ও ইংরেজী ১৭ অক্টোবর ১৮৯০ সালে এখানেই মরমী সাধক লালন সাঁইয়ের শেষ শয্যা রচিত হয়। গবেষকদের মতে, বাউল সাধক ফকির লালন শাহ’র জীবদ্দশায় দোল পুর্ণিমা উপলক্ষে পালন করা হতো দোল উৎসব। আর দোল পুর্ণিমাকে ঘিরেই বসতো সাধু সংঘ। লালনের সেই স্মৃতির ধারাবাহিকতায় লালন একাডেমীও প্রতিবছর এ উৎসবটিকে ‘লালন স্মরণোৎসব’ হিসাবে পালন করে আসছে। তবে লালন অনুসারীরা দিনটিকে ‘দোল পূর্ণিমা’ উৎসব হিসাবেই পালন করে থাকেন। সাধুদের মতে, সত্যিকার অর্থে লালন অনুসারীরা দোল পূর্ণিমার এ রাতটির জন্য সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। সাঁইজির রীতি অনুসারে দোলপুর্ণিমার রাতের বিকেলে অধিবাসের মধ্য দিয়ে ২৪ ঘণ্টার দোলসঙ্গ শুরু হয়। চৈত্রের পূর্ণিমা রাতে জ্যোৎস্নার ছটায় আর মাতাল হাওয়ায় গানে গানে বাউল সাধকরা হারিয়ে যায় ভিন্ন কোনো জগতে। পরের দিন ৪ টায় ‘পুণ্যসেবা’ দিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ করে আখড়াবাড়ি ত্যাগ করেন বেশির ভাগ সাধু। প্রকৃত সাধুসঙ্গের অধিবাস শেষ হলেও লালন একাডেমি আয়োজিত মূল মঞ্চে লালনগীতি ও লালনমেলা চলে আরও দু দিন। তাঁরা মনে করেন, মানবধর্মই বড় ধর্ম। একসাথে এভাবে সাধুসঙ্গ করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। সাধু-গুরুর কৃপা ছাড়া মানুষ মুক্তি পেতে পারে না। তার কৃপায় মানুষ সঠিক পথ দেখে। লালন স্মরনোৎসব ঘিরে কালীগঙ্গা নদীর ধারে প্রতিবছরই বসে জাঁকজমকপূর্ণ বিশাল গ্রামীণ মেলা।

গতকাল ৪ মার্চ শনিবার দোল পুর্ণিমার রাতে শুরু হয়ে তিনদিন ব্যাপি লালন স্মরণোৎসব-২০২৩। শুরুর দিনই সন্ধ্যায় ৩ দিনব্যাপি লালন স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি । আলোচনা সভা শেষে লালন একাডেমীর শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হচ্ছে রাতভর লালন সংগীত। অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে আরও বেশি লোক সমাগম ঘটেছে লালন ভক্ত অনুসারীদের। আর এ উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছেন বলে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান।

শেয়ার করুন

এ বিভাগে আরও সংবাদ

ট্রেড লাইসেন্স নং- ৪৫৭৯

Design By: Rubel Ahammed Nannu-01711-011640