নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-
আসামিদের মধ্যে ছয়জন পলাতক। বাকিদের রায় ঘোষণার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পূর্ব শত্রুতার জেরে পাবনায় দুই যুগ আগে কৃষক আব্দুস সালামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা মামলায় ২১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয় আদালত) আদালতের বিচারক ইশরাত জাহান মুন্নী এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবনের পাশাপাশি বিচারক প্রত্যেক আসামিকে দশ হাজার টাকা জরিমানাও দিয়েছেন। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাদের।
দণ্ডিতরা হলেন-সদর উপজেলার ভাদুরীডাঙ্গী গ্রামের সোবাহান মোল্লার ছেলে শাহজাহান মোল্লা, আব্দুল বাছেদ শেখের ছেলে মিনহাজ, শাকের মোল্লার তিন ছেলে ছেলে নবী শেখ, সুলতান মাহমুদ পক্ষী ও মোক্তার, মৃত ছোবা শেখের ছেলে বাছেদ শেখ, ইনাই খাঁর ছেলে আইয়ুব খাঁ, আমির মোল্লার ছেলে আসলাম, গফুর মোল্লার ছেলে লতিফ মোল্লা, রুস্তম মোল্লার ছেলে ছোবাই মোল্লা, বাহাই প্রামাণিকের ছেলে কালাম, আকুল মোল্লার ছেলে মহির মোল্লা, হাচেন মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ আলী মোল্লা ও রেজাউল মোল্লা, গফুর মোল্লার ছেলে বাবু মোল্লা, সুজানগর উপজেলার চর ভবানীপুর গ্রামের করিম মোল্লার দুই ছেলে ছেলে মোকছেদ মোল্লা ও বারেক মোল্লা, মৃত বশির মোল্লার ছেলে করিম মোল্লা, ভবানীপুর কাচারী মাঠ সংলগ্ন আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে খোকন, মানিকদিয়ার গ্রামের হবিবুরের ছেলে রফিক ও সদর উপজেলার কোলচুরি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে বাবলু।
আসামিদের মধ্যে বারেক, মিনহাজ, বাবলু, বাছেদ শেখ, লতিফ মোল্লা ও ছোবাই পলাতক; তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আর বাকি ১৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ৭ নভেম্বর চরতারাপুর গ্রামের আব্দুস সালাম কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে এ সময় আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ঘিরে ধরে। সালাম দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পেছন থেকে গুলি করা হয়। এ সময় সালাম মাটিতে পড়ে গেলে তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই জব্বার। এক বছর পরে ১৯৯৯ সালের ১ অগাস্ট ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলা চলাকালীন সময়ে তিন আসামির মৃত্যু হয়।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন সনৎ কুমার সরকার এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি (অতিরিক্ত পিপি) ইউসুফ আলী।
ইউসুফ আলী বলেন, “পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।”
তবে মামলায় ন্যায় বিচার হয়নি বলে মন্তব্য করে আসামি পক্ষের আইনজীবী সনৎ কুমার বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারপরেও এই রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।