1. nannunews7@gmail.com : admin :
শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০২:০৩ অপরাহ্ন

বাংলা নববর্ষ উদযাপন ‘নির্ভয়’ গানে নতুন আলোর সন্ধান

  • প্রকাশের সময়ঃ- শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৬ পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পঞ্জিকার পাতায় বাংলা বর্ষবরণের লগ্নটিকে চিহ্নিত করা গেলেও বাঙালি-জীবনে তার বিস্তারকে সীমায়িত করা যায় না। করাল করোনাকালে বৈশাখী ঢোল বাজেনি বটে, কিন্তু মানুষের মনে তার ছন্দ-দুলুনি যে চিরদিনের! দুঃসময়ের সেই আয়োজনশূন্যতায় তাই বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য বিফল হয়নি, তার আবেদনও কমেনি এতটুকু।  এরই মধ্যে ‘করোনা-কুয়াশা’ কাটিয়ে প্রখর হয়েছে ‘সুসময়ের’ সূর্য; তাই বৈশাখবরণে যোগ হয়েছে আগের সেই আলো-ঝলমলতা। দুঃসময়কে পরাহত করে পেছনে ফেলে আসার স্বস্তি মানুষকে অনেক বেশি উজ্জীবিত করছে উৎসবমুখর হতে। আর প্রকৃতির অঙ্গনে তো বৈশাখের উপস্থিতি বরাবরের মতোই অবারিত। চিরনতুনের ডাক দিয়ে আসা পহেলা বৈশাখ রঙ ছড়াচ্ছে বাঙালির মনে। নারী-পুরুষের রঙিন সাজে, শিশুর মুখের হাসি আর বর্ণিল পোশাকে তারই প্রকাশ। শুক্রবার নানা আয়োজনে, নানা আঙ্গিকে সারা দেশে চলছে বর্ষবরণ। সংগীতায়ন ছায়ানট রাজধানীর রমনা বটমূলে ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে বরণ করেছে নব আলোর সন্ধান করার আহ্বানে। সূরে্যাদয়ের সঙ্গে আহির ভৈরব সুরে সারেঙ্গিবাদনের মধ্যে দিয়ে রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন। ১০টি সম্মেলক গান, ১১টি একক গান, দুটি আবৃত্তি এবং সবশেষে জাতীয় সংগীতে সাজানো হয় এ অনুষ্ঠানমালা। রমনা উদ্যানের প্রায় দুঘণ্টাব্যাপী এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা গেছে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও। সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আয়োজনে তপ্ত এই বৈশাখ হয়ে উঠেছে বর্ণিল উৎসবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে নতুন বাংলা বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দুজনের শুভেচ্ছা বাণীতেই প্রত্যাশা সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে এগোনোর। পঞ্জিকার পাতা উল্টে ১৪২৯ থেকে ১৪৩০ সাল আসা সাধারণ একটি ঘটনা হলেও বাঙালির জীবনে এই সাধারণ ঘটনার শুরুই হয় ভিন্ন মাত্রা নিয়ে। কৃষি উৎসব বা রাজস্ব আদায়ের বিষয় হিসেবে বৈশাখকে সামনে এনে বাংলা সাল প্রবর্তনের পর বাঙলার অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন প্রভাবিত করলেও তা রাজনৈতিক হয়ে ওঠে পাকিস্তান শাসনামলে। রমনা বটমূলে ‘নির্ভয়’ গানে নতুন আলোর সন্ধান পাকিস্তানের সেনাশাসক আইয়ুব খানের আমলে যখন বাঙালির বাঙালিয়ানা নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধ করা হয়, তখন এই বর্ষবরণ উৎসব হয়ে উঠেছিল বাঙালির আত্মপরিচয় টিকিয়ে রাখার রাজনৈতিক হাতিয়ার। এই চেতনাই পরে বাংলাদেশকে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতার বন্দরে পৌঁছে দেয়। পাকিস্তান আমলে ছায়ানট সংস্কৃতি কেন্দ্র রমনার বটমূলে প্রতিবাদী উচ্চারণে বৈশাখ বরণের যে আয়োজন করেছিল, তা কালে হয়ে উঠেছে নগরে এই উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ। তার সঙ্গে পরে যুক্ত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি’। তার কারণ ব্যাখ্যা করে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, “বর্তমানে মানুষের মাঝে হানাহানি, অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। তার চরম মাত্রায় পৌঁছে এই রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও চরম ধ্বস নেমেছে। তাই আমাদের এবারের কামনা পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসুক।” গত শতকের আশির দশকে সামরিক শাসনের অর্গল ভাঙার আহ্বানে পহেলা বৈশাখে চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল; সেটিই পরে মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম নেয়। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতিও পায় এ কর্মসূচি। মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবারও কোনো মুখোশ মুখে পরা যাবে না, নেওয়া যাবে না ব্যাগ।

চারুকলা অনুষদের বানানো মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা বিধি-নিষেধের বাইরে। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা নিষেধ।

শেয়ার করুন

এ বিভাগে আরও সংবাদ

ট্রেড লাইসেন্স নং- ৪৫৭৯

Design By: Rubel Ahammed Nannu-01711-011640