1. nannunews7@gmail.com : admin :
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১১:০০ অপরাহ্ন

রাজধানীজুড়ে হিজড়াদের দাপট, টার্গেটে প্রবাসীরা

  • প্রকাশের সময়ঃ- শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৫৩ পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন বছর পর দেশে ফেরেন হাবিবুর রহমান। তিনি দুই দশক ধরে থাকেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। রবিবার দেশে আসার সময় পরিবারের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন উপহার নিয়ে আসেন। স্বজনরাও হাবিবুর রহমানকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিমানবন্দরে এসেছিলেন। ভাড়া করা মাইক্রোবাসে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হতে টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সামনে ইউটার্ন নিয়ে বনানীমুখী সড়কে গেলেই ওত পেতে থাকা হিজড়ারা তাদের জিম্মি করে ফেলে। তিন হিজড়ার দুজন গাড়ির জানালায় গিয়ে চাঁদা চায়। আর একজন সামনে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি থামিয়ে রাখে। ঘটনাটি যেখানে তার প্রায় ৫০ গজ দূরেই দাঁড়িয়ে সড়কে যানজট নিরসনে কাজ করছিলেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তবু হিজড়াদের কবল থেকে রক্ষা করতে তারা কেউ এগিয়ে আসেননি। হাবিবুর রহমানের কাছে হিজড়ারা ১ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরিবারের সবার সামনে তাদের অশ্লীল কথাবার্তার মুখে এক প্রকার বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে তাদের বিদায় করেন তিনি।

জানা গেছে, বেপরোয়া হিজড়াদের উৎপাতে প্রবাসী ছাড়াও চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন নতুন সন্তান জন্ম দেওয়া বাবা-মা এবং বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের আজমপুর, আবদুল্লাহপুর, টঙ্গী এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের উল্টো পাশের সড়ক, কুড়িল, কুর্মিটোলা হাসপাতালের উল্টো পাশ, কাকলি, চেয়ারম্যানবাড়ী, মহাখালী, মিরপুর-১০, টেকনিক্যাল মোড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হিজড়াদের দিনদুপুরে চলে চাঁদাবাজি। এসবের পেছনে কারা- খুঁজতে গিয়ে যোগাযোগ করা হয় রাজধানীর মগবাজারের স্বপ্না হিজড়ার সঙ্গে। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আবদুল্লাহপুর এলাকায় চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ করে শান্তা হিজড়া, বিমানবন্দর এলাকায় শারিকা আর বনানী নিয়ন্ত্রণ করে নাখালপাড়ার ঝুমা হিজড়া। সর্দারনিরা প্রকৃত হিজড়া, কিন্তু অনুসারীরা নকল। জানা গেছে, এরা এখন বেশি বেপরোয়া। আর প্রশাসনও অজ্ঞাত কারণে এদের কিছু বলে না। হিজড়াদের মধ্যে কচি, হুররাম, রাখি ও তানিয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীতে ৮-১০টি হিজড়া গ্রুপ চাঁদাবাজি করে। প্রতিটি গ্রুপই দিনে লাখখানেক টাকা চাঁদা ওঠায়। হিজড়া ঝুমা বলেন, ‘আমাদের চাঁদা ওঠে দিন এনে দিন খাওয়ার মতো। আমরা কিছু দোকান, বিয়েবাড়ি আর নতুন বাচ্চা হলে টাকা নিই। আর বিমানবন্দর এলাকার চাঁদাবাজির পুরোটাই করে শারিকার লোকজন।’ হাবিবুর রহমানের মতো কুড়িল বিশ্বরোডে হিজড়াদের কবলে পড়েন কুয়েতপ্রবাসী আনিসুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘এক বছর ছয় মাস পর যখন মাতৃভূমিতে এলাম বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর বিশ্বরোডে একদল হিজড়া আমাদের গাড়ি লক্ষ করে সামনে দাঁড়ায়। তখন তাদের মধ্য থেকে একজন আমার কাছে এসে ২ হাজার টাকা দাবি করে। আমি গড়িমসি করায় তারা উচ্চৈঃস্বরে অশ্লীল বাক্য ছোড়ে এবং শারীরিকভাবে হেনস্তার চেষ্টা করে। এর আগে এসব বিষয়ে আমি শুনেছি, কখনো সম্মুখীন হইনি। পরিবারের সবার সামনে একপ্রকার লজ্জায় পড়ে ১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।’ ভুক্তভোগীরা বলছেন, হয়তো বিমানবন্দরে হিজড়াদের কোনো সোর্স কাজ করে। যে কারণে প্রবাসীরা ফিরলেই এরা সড়কে সতর্ক অবস্থান নেয়। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘বিমানবন্দরে তাদের সোর্স থাকলে আমরাই আটক করতাম। হিজড়ারা এমন কিছু পয়েন্ট সিলেক্ট করে যেখানে গাড়ি স্লো হতে বাধ্য। সেসব জায়গায় তারা গাড়িতে যাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে।’ ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত হিজড়াদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। মামলা নিচ্ছি, গ্রেফতার করছি। বিমানবন্দর সড়কে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন

এ বিভাগে আরও সংবাদ

ট্রেড লাইসেন্স নং- ৪৫৭৯

Design By: Rubel Ahammed Nannu-01711-011640