নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-
ধর্মঘটের কারণে ঘাটেই নোঙর করা হয়েছে লঞ্চ। শ্রমিকরাও অলস সময় কাটাচ্ছে।
সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা বেতন ও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ বাড়ানোসহ দশ দাবিতে নৌ-শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে ভোলায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলার নৌ-যান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে সোমবার সকাল থেকে ভোলার ইলিশা, ভেদুরিয়াসহ কোনো ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এতে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দ্বীপজেলাটি; দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ঘাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে- অন্যদিনের মত হকারদের হাঁক-ডাক ও যাত্রীদের কোলাহল নেই। ঘাটেই নোঙর করে রাখা হয়েছে কয়েকটি লঞ্চ। শ্রমিকরা গল্পে আড্ডায় অলস সময় কাটাচ্ছেন।
যাত্রীরা ঘাটে এসে লঞ্চ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন; কেউ কেউ গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বিকল্প ব্যবস্থায়। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। ভেদুরিয়া ঘাটে ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করলেও বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
লঞ্চ না পেয়ে ঘাট থেকে ফিরে যাওয়ার সময় বরিশালের সামাদ রবিন বলেন, “ভোলায় এসেছিলাম বেড়াতে, এখন আবার ফিরব। কিন্তু কোনো লঞ্চ পাচ্ছি না। ছোট ট্রলার চলছে, কিন্তু তাতে অনেক ঝুঁকি আছে।”
যাত্রী জুয়েল বাবু বলেন, “জানতাম না যে লঞ্চ ধর্মঘট চলছে। ঘাটে এসে দেখি এমন অবস্থা। এখন চরম দুর্ভোগে পড়েছি।”
নাসরিন আক্তার নামের অপর এক যাত্রী বলেন, “শ্রমিকদের দাবির জন্য আমাদের কেন দুর্ভোগ পোহাতে হবে? লঞ্চ বন্ধ রেখে এভাবে যাত্রীদের বিপদে ফেলার কোনো মানে হয় না।”
এ বিষয়ে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশাল বিভাগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল হোসেন বলেন, “দশ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। লঞ্চ মালিক পক্ষ আমাদের এখনও ডাকেননি। তারা দাবি না মানলে কর্মবিরতি চলমান থাকবে।”
শ্রমিকদের বাকি দাবিগুলো হলো- শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, নৌ দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, চাঁদাবাজি বন্ধ, রাতে নৌযান চলাচল শিথিল করা, ভারতগামী জাহাজ ল্যান্ডিং করার পাস এবং কল্যাণ তহবিল গঠন।